বিভিন্ন দেশের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ, লীগ আমলে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের ভিডিও/ছবি ইত্যাদি সংগ্রহ করে নতুন করে যারা প্রচারণা করছে তারা কিন্তু লীগ ও কিছু রাজনৈতিক দলের দোসর। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাই, প্যানিক সৃষ্টি করে সাধারণ জনতাকে বুঝাতে চাই আগেই ভালো ছিলাম। আবার কিছু রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ এই পরিস্থিতির ফায়দা লুটতে বেশি বেশি শেয়ার করছে যেনো এই সরকারকে ব্যর্থ দেখিয়ে নির্বাচন দ্রুত করা যায় এবং তাদের নেতা কর্মীদের যোগসাজশের প্রমাণ মিলছে। বিভিন্ন অপরাধের সাথে তাদের জড়িয়ে পড়ার খবরও আসছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়।
দুষ্টু রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের এখন একটায় ইচ্ছা কীভাবে ক্ষমতায় গিয়ে ভাগবাটোয়ারা করে লুটেপুটে দেশটাকে ধ্বংস করা যায়। নিজেদের আখের গুছানো যায়। অথচ ২০০০ এর অধিক ছাত্র জনতার জীবন, আহত ত্রিশ হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণ অভ্যুত্থান কিংবা বিল্পবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে তাদের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।
মনে রাখবেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে, বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অমানুষ,দালাল সুশীল, বটবাহিনীর পিছনে আওয়ামী লীগের অবৈধ কোটি কোটি টাকা ঢালা হয়েছে, গুজব সেল তাদের কার্যক্রম বেশ ভালো ভাবেই করছে। অতীতেও বহু অপরাধ, ধর্ষণ অপকর্ম হয়েছে যা বর্তমান সময়ের থেকে অনেক বেশি তবে সেইগুলোর বেশিরভাগই মিডিয়াতেই আসতে দেওয়া হয়নি এবং যেগুলো ভাইরাল হয়েছে সেই আসামীগুলোকেও রাজনৈতিক পরিচয়ে গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু বর্তমান পজেটিভ নিউজ গুলোকে সাইড করে দিয়ে শুধু নেগেটিভ ঘটনাগুলো প্রমোট করে মিডিয়া প্রচার ও গুজব সেল লাখ লাখ টাকার ডলার বু্স্ট করছে জনতার মাঝে প্যানিক সৃষ্টির জন্য।
আমাদের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিপ্লবী সরকার হয়ে উঠতে না পারলেও যেকোনো ঘটনা ঘটলে অন্তত্য অভিযুক্তদের অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের করছে, বিচার কার্যক্রম শুরুও হয়েছে। আইনের দূর্বলতা ও পুলিশ প্রশাসনে লীগের দোসরদের অসহযোগিতা করার কারণে বিচারে সময় লাগছে। তবে তারপরও আমরা নিশ্চিন্তে এই সরকার কিংবা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে স্বাধীন ভাবে আলোচনা সমালোচনা করতে পারছি, বিভিন্ন বিষয়ে রাস্তায় দাবি দাওয়া নিয়ে মানবন্ধন ও আলোচনা করতে পারছি, সেইগুলো আমলে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং সবচেয়ে বড় কথা রাতের আঁধারে পুলিশ-প্রশাসন যে গুম করে দেওয়ার অথবা গ্রেফতার করার ভয় থাকছে না এটাই তো অনেক। বিগত যেকোন সরকারের তো সমালোচনা করাই যেত না আর করলেও জেল, জুলুম, গু*ম ও বিচারবহির্ভূত হ*ত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। কেবলমাত্র ফেসবুক পোস্টের অপরাধে কত শত নিরপরাধ মানুষকে জুলুমের শিকার হতে হয়েছে।
এই সরকার গঠন হওয়ার পর বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে, রাজনৈতিক আত্নীয়করণে কাউকে চাকরি দেওয়া কিংবা অপরাধ করলে গ্রেফতার না করা এমন কিন্তু ঘটছে না। ঘটলেও তার পরিমাণ তুলনামূলক অনেক কম। আলহামদুলিল্লাহ দ্রব্য মূল্য বর্তমান রমজান মাসেও সহনশীল রয়েছে। আমি বলছি না যে চুরি ছিনতাই ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে না তবে ঘটলে সেটার বিরুদ্ধে একশন নেওয়া হচ্ছে। আমি চাই ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। ধর্ষক শিল্পপতি কিংবা গরিব যে ধর্ষক তাকেই গ্রেফতার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার কার্য নিরপেক্ষভাবে সম্পূর্ণ করা হোক। এবং নারী শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের যে আইনটা রয়েছে তা বর্তমান বাস্তবতার সাথে সংস্কার করা হোক। এডাল্ট ছেলে-মেয়ে পরকিয়া কিংবা প্রেম ঘটিত শারীরিক সম্পর্ক যেনো ধর্ষণের মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা না হয়। স্বেচ্ছায় প্রেমিক প্রেমিকা পালিয়ে গিয়ে পরে পরিবারের চাপে কিংবা মন মালিন্য হলে সেটা যেনো অপহরণ ও ধর্ষণের মামলায় অন্তর্ভূক্ত না হয়, এতে প্রকৃত জোরজবরদস্তি ধর্ষণ মামলাগুলো গুরুত্ব পাবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুত একশন নিতে পারবে।
যদিও আমলা ও প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লীগের ক্যাডারে পরিপূর্ণ অতএব তাদের পরিকল্পনা ও অসহযোগিতায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দূর্বল।
অপরদিকে অতি উৎসাহী মব সৃষ্টিকারীরাও দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর সুযোগ করে দিচ্ছে, তাছাড়া ভারত, আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী দোসরদের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র ও ফান্ডিং তো চলমান রয়েছেই।
এদের আমলা, সাংস্কৃতিক পা চাটা চামচাগুলোকে চিহ্নিত করে প্রতিহত করতে হবে, লীগের সোস্যাল একাউন্ট ও বিভিন্ন এক্টিভিটিগুলোকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো এদের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক পন্থায় লড়তে হবে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও দেশপ্রেমিক তৈরি করতে হবে। মব সৃষ্টি নয়, নিজ নিজ জায়গা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা ও নিজেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও অনলাইন এক্টিভিস্ট হিসেবে সকল অপচেষ্টা, অপপ্রচার রুখে দিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বন্ধ করতে হবে, প্রয়োজনে সমাজের সকল স্তরের মানুষে নিয়ে এদের প্রতিহত করতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা, নেতাকর্মীদের বৈধ কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়তা ও ভালো কাজের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে।
এলাকা ভিত্তিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অন্যায় দেখলেই প্রশাসন ও মিডিয়াকে খবর প্রদান, আইন রক্ষা করে এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রতিবাদ ও প্রয়োজনে সামাজিক মিডিয়ায় প্রচারণা করতে হবে।
আসুন ছাত্র-জনতার র*ক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিপ্লব ও নতুন বাংলাদেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসি।
সংস্কার ও দেশপ্রেমের মিশন হোক।
রাষ্ট্র সুন্দরভাবে গড়ে তোলার মিশন হোক।
মোঃ সোহাগ আলী
( উদ্যোক্তা, মিডিয়া ও মানবাধিকার কর্মী )
১০ মার্চ, ২০২৫~সোমবার
মুক্ত বাংলা টিভি, ঢাকা।