মুক্ত বাংলা ডেস্ক:
সুন্দরবন সংলগ্ন ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন করে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প স্থাপন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করছে সরকার। পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এ বিষয়ে একটি সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, “সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত এই বনাঞ্চল আমাদের জাতীয় গর্ব, এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।”
বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে যে সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইসিএ (Ecologically Critical Area) অর্থাৎ পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে, সেগুলোর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (EIA) পুনরায় যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশবাদীরা সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সভাপতি ড. মোজাফফর আহমদ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা সুন্দরবনের চারপাশে অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক, তবে এর বাস্তবায়ন কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।”
উল্লেখ্য, সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যা শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। এই বনাঞ্চল বাঘ, হরিণ, কুমিরসহ অসংখ্য বিরল প্রাণীর আবাসস্থল। পাশাপাশি এটি দেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে আসছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত যদি কঠোরভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে সুন্দরবন সংরক্ষণে এটি এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।