স্টাফ রির্পোটার:
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নে গভীর রাতে টিসিবির পণ্য গোপনে বাড়িতে নেওয়ার সময় স্থানীয়দের বাধায় উদ্ধার হয়েছে ১৫টি প্যাকেট। ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলারের কর্মচারী রাজু পণ্যগুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (২০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি রাস্তায় স্থানীয় নবাব নামের এক যুবক ভ্যানগাড়িটি থামিয়ে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে পণ্যসহ রাজুকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নিয়ে আসে। রাত ১০টা পর্যন্ত রাজু ও পণ্যগুলো সেখানে আটকে রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানান, টিসিবির ১৫টি প্যাকেট রাজু ভ্যানে করে তার বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে নবাব ভ্যানটি আটকান। পরে বাজারে থাকা আরও কয়েকজন লোক গিয়ে রাজুকে পণ্যসহ আটক করে পরিষদে নিয়ে আসেন।
নবাব বলেন, “রাতে এতগুলো টিসিবির পণ্য গোপনে বাড়িতে নেওয়া হচ্ছিল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে। আমি দৌড়ে গিয়ে ভ্যানটি থামিয়েছি, না হলে পালিয়ে যেত।”
আটককৃত কর্মচারী রাজু বলেন, “সাব-ডিলার একরামুল হকের নির্দেশে পণ্যগুলো বাড়িতে নিচ্ছিলাম। বলা হয়েছিল, এই মাল পরবর্তী মাসে সমন্বয় করা হবে।”
ভানোর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, “বিতরণের পর অবশিষ্ট ১৫টি প্যাকেট পরিষদ চত্বরেই রাখা ছিল। কিন্তু রাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয়। আমি ইউএনওকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনিও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।”
টিসিবির ডিলার মেসার্স মাহিম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল আওয়াল বলেন, “৫ দিন ধরে পণ্য বিতরণ চলছে। সাব-ডিলার একরামুলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। আমি বিষয়টি পরে জানতে পেরে একরামুল ও ইউএনওর সঙ্গে কথা বলব বলে জানিয়েছি।”
তবে কেন রাতের বেলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পণ্য গোপনে বাড়িতে নেওয়া হচ্ছিল—এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি একরামুল হক।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, “উদ্ধার হওয়া মালামাল ইউপি চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখতে বলা হয়েছে। আগামীকাল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডিলার জানান, ভানোর ইউনিয়নে টিসিবির স্মার্ট কার্ডধারী সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৭৫৫ জন। এর মধ্যে ৭৪০ জনকে পণ্য বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে এক বছর আগে একরামুল হককে টিসিবির পণ্যসহ গভীর রাতে আটক করে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তি দিয়েছিল।