সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বালিয়াডাঙ্গীতে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু, বাবা-ছেলেসহ আহত ৩ ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়ির উঠানে ধরা পড়ল বিরল নারী ময়ূর টিটিসিতে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ঢাকতে ফেইসবুকে সাংবাদিকদের নিয়ে কটাক্ষ অধ্যক্ষের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান, দুই পরিবহনকে জরিমানা হাজী আব্দুল মজিদ ফাউন্ডেশনের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ইমামের চাকরি দেওয়ার নামে এক প্রতারণা, সেনাবাহিনীর হাতে আটক বালিয়াডাঙ্গীকে মিনি গোপালগঞ্জ বলা হতো : ফারুক হাসান সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযান ঠাকুরগাঁওয়ে, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো লক্ষ্য ১২ ঘন্টায় হাসপাতালে ৫৬ জন ভর্তি : বালিয়াডাঙ্গীতে ডায়রিয়া ও জমি বিরোধে চরম অবস্থা রাণীশংকৈলবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন সাবেক যুবদল নেতা অ্যাপোলো

ঠাকুরগাঁওয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে জখম, কারাগারে বিএনপি নেতা

Oplus_131072

স্টাফ রিপোর্টার:

ঠাকুরগাঁওয়ে জমি দখলে বাধা দেওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজর আলীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে এমদাদুল হক শরীফ নামে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে আটক করে এবং পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

বুধবার (২৮ মে) দুপুরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন মুসলিমনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজর আলীর ছেলে আল মামুন (৩৮) বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় বিএনপি নেতা এমদাদুল হক শরীফসহ চারজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন মুসলিমনগর এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে এমদাদুল হক শরীফ (৩৬), মাজহারুল ইসলাম নয়ন (৪৩), জহিরুল ইসলাম লিটন (৪১) ও রাসেল আহম্মেদ (৪৩)। এমদাদুল হক শরীফ পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে আল মামুনদের দোকানঘর ও জমি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে এমদাদুল হক শরীফ তার সহযোগী মাজহারুল ইসলাম নয়ন, জহিরুল ইসলাম লিটন, রাসেল আহম্মেদসহ ১০-১৫ জনের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। এসময় দোকানে বসে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজর আলী বাধা দিলে বিএনপি নেতা শরীফ ও তার সহযোগীরা অতর্কিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।

হামলার সময় এমদাদুল হক শরীফ চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে ফজর আলীর কপাল ও হাত গুরুতর জখম হয়। পরে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে শরীফের সহযোগীরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করে। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ফজর আলীকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই রাতেই আল মামুন থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতা এমদাদুল হক শরীফকে আটক করে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, বিএনপির বড় নেতা পরিচয়ে এমদাদুল হক শরীফ জোরপূর্বক আমাদের দোকানঘর ও জমি দখল করতে আসেন। এর আগেও তিনি একাধিকবার লোকজন নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করেছেন। এখনো বিএনপি ক্ষমতায় আসেনি, এরই মধ্যে সে জমি দখল ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে — ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে কী করবে? সে যদি জমির কোনো অংশ দাবি করত, তাহলে আলোচনা হতো। কিন্তু কোনো কথা না বলেই বারবার জোরপূর্বক আমাদের ওপর অত্যাচার করছে এবং দোকানে তালা মেরে দেয়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজর আলীর সঙ্গে হাসপাতালে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি অসুস্থ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আল মামুন বলেন, “আমরা বাইরে কাজে থাকায় এই সুযোগে এমদাদুল হক শরীফ ও তার লোকজন জোরপূর্বক জমি ও দোকান দখল করতে আসে। আমার বাবা বাধা দিলে তারা দা দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। বাবার সঙ্গে থাকা ৭ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।”

তবে অভিযোগ সম্পর্কে অভিযুক্ত মাজহারুল ইসলাম নয়ন, জহিরুল ইসলাম লিটন ও রাসেল আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফ বলেন, “পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক শরীফের বিরুদ্ধে এক মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। তিনি যদি সত্যিই এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন, তাহলে দলের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত কুমার পাল বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজর আলীকে মারধরের ঘটনায় তার ছেলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এমদাদুল হক শরীফকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।”



লাইক করুন