আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উপলক্ষে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ–জার্মান হেল্প ফর ম্যান-এর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচির প্রধান অতিথি জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, আমাদের সমাজে আজও নানাভাবে পুরুষরা নির্যাতিত হচ্ছেন, কিন্তু তারা সেই অভিযোগ কোথাও বলতে পারেন না। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আলাদা আইন থাকলেও পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন নেই—যা সমাজে বৈষম্যের একটি বড় উদাহরণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ঈসা বলেন, “পরকীয়া বা দাম্পত্য কলহের ক্ষেত্রে সবসময় পুরুষদের একতরফাভাবে দোষী ধরে নেওয়া হয়। অথচ একই ঘটনায় নারীর দায়ও থাকে—কিন্তু আইন ও সমাজ উভয়ই সেখানে নীরব। পুরুষদের মানসিক, সামাজিক ও পারিবারিক নিপীড়নের বিষয়টি আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ–জার্মান হেল্প ফর ম্যান আজ যে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে, তা দেশের সামাজিক বাস্তবতায় একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করেছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ। পুরুষদের অধিকার নিয়ে যারা কাজ করছেন, তাদের এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মাজহারুল মান্নান মিয়া। তিনি বলেন, পুরুষদের ওপর হওয়া মানসিক, আর্থিক, সামাজিক এবং পারিবারিক নিপীড়ন নিয়ে কথা বলা এখন সময়ের দাবি। পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে এবং সমাজে পুরুষদের ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তাদের সুরক্ষা ও মর্যাদাও তেমনই উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও কর্মসূচিতে সংগঠনের অন্যান্য নেতা, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন— শুধুমাত্র নারীর অধিকার নয়, পুরুষের অধিকার রক্ষার কথাও সমাজে সমানভাবে আলোচিত হওয়া উচিত। পরিবারে দায়িত্ব, কর্মক্ষেত্রে চাপ এবং সামাজিক প্রত্যাশার কারণে পুরুষরা অনেক সময় চরম মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেন। পুরুষদের প্রতি সহিংসতা, অপবাদ, মিথ্যা মামলার বিষয়গুলো স্বীকৃতি ও আইনি সমাধান প্রয়োজন।
মানববন্ধনে বক্তারা পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধে পৃথক আইন, মানসিক সহায়তা সেল, আইনি পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জানান। কর্মসূচির শেষে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তারা বলেন— “একটি সুস্থ, ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে পুরুষ ও নারী উভয়ের অধিকার, সম্মান ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।”